আপনার কি নিজস্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে? ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে মার্কেটিং সেক্টরে নতুনত্ব আনতে চান?
একবিংশ শতাব্দীতে ব্যবসা খাতে এক বিপ্লব সাধিত হয়েছে। এই বিপ্লবে ব্যবসা খাত উন্নতির শীর্ষে আরোহণ করেছে। ব্যবসা খাতের উন্নয়নের ফলে দেশসমূহের অর্থনৈতিক অবস্থা বেশ বেগবান হয়েছে। কিন্তু সঠিক পরিকল্পনার অভাবে অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব বিলীন হতে চলছিল। কিন্তু ব্যবসা ক্ষেত্রে প্রযুক্তির নিত্য নতুন ধরনের ফলে এখন ব্যবসা খাতে সুদিন ফিরছে। ব্যবসা খাতে প্রযুক্তি এক অন্যতম আশীর্বাদ হল ডিজিটাল মার্কেটিং।
ব্যবসা খাতে মার্কেটিং :
একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পণ্য সমূহ প্রচার এবং বিপণনের উপর ব্যবসার লাভ ক্ষতি নির্ভর করে থাকে। যেকোনো ব্যবসার উন্নয়ন তখন সাধন হয় যখন সেই প্রতিষ্ঠানের পণ্যসমূহের প্রচার ঠিকভাবে হয়। তাই পণ্যের প্রচার এবং প্রসারে মার্কেটিং এর গুরুত্ব কতখানি তা বলার অপেক্ষা রাখেনি! কারণ আপনার প্রতিষ্ঠানের পণ্য কি কি আছে, তা যদি প্রচার করা না হয় তা যেমন আমার পক্ষে জানা সম্ভব না ঠিক তেমনি করে অন্যরাও জানবে না। মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে একটি পণ্যকে সহজভাবে বাজারে নিয়ে আসা হয় এবং গ্রাহকদের সামনে উপস্থাপন করা হয়।
ডিজিটাল মার্কেটিং কি
প্রযুক্তির ক্রম-বর্ধন উন্নতির ফলে আমাদের দৈনন্দিন জীবনধারা পাল্টে গিয়েছে। প্রযুক্তির ফলে আমাদের দৈনন্দিন কাজকর্ম সহজ হয়ে গেছে। সব খাতে বেশ উন্নতি হয়েছে। ব্যবসা খাত তার মধ্যে অন্যতম। বর্তমানে মার্কেটিং জগতে বিপ্লব সাধিত হয়েছে। আর এই বিপ্লবের নাম হল ডিজিটাল মার্কেটিং। এখন অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে কি ধরণের মার্কেটিং এটি ?
মূলত প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে কোন একটি প্রতিষ্ঠানের পণ্যকে স্বল্প সময়ে অধিক সংখ্যক গ্রাহকের সামনে পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যমকে বলা হয় ডিজিটাল মার্কেটিং।
এর মাধ্যমে বর্তমানে ব্যবসা-ক্ষেত্র বেশ উন্নতির দিকে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে বিক্রেতাগণ খুব স্বাচ্ছন্দ্যে যেমন তাদের পণ্যসমূহ গ্রাহকদের সামনে পৌঁছে দিতে পারছেন ঠিক তেমনি করে ক্রেতার সংখ্যাও বাড়াতে সক্ষম হচ্ছেন। মূলতই এই মাধ্যমের ফলে বিক্রেতার কষ্ট অনেকাংশে লাগবে হয়েছে এবং সেই সাথে ব্যবসা খাতে বেশ প্রসার হয়েছে।
ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের সুবিধা:
বর্তমানে ব্যবসা করা আগের থেকে এখন সহজ হয়ে গিয়েছে। বরং এখন আপনাকে আপনার পণ্যসমূহ মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে প্রচার করতে হয় না। আপনি ঘরে বসেই আপনার পণ্যসমূহের প্রচার করতে পারেন মুহূর্তেই। তারই অন্যতম একটি উদাহরণ Digital Marketing। ডিজিটাল মার্কেটিং এর সুবিধাদির কথা এক বাক্যে বলে শেষ করা যাবে না। চলুন তাহলে জেনে আসি এর সুবিধাসমূহ সম্পর্কে :
আপনার প্রতিষ্ঠানের পণ্য সমূহের বৃহৎ থেকে বৃহত্তর পরিসরে উপস্থাপন করতে পারবেন।
সহজেই পণ্যসমূহে কেনার ব্যাপারে মানুষকে আকৃষ্ট করতে পারবেন।
চাহিদা অনুযায়ী গ্রাহক পেতে পারবেন সহজে।
খুব সহজে প্রতিষ্ঠানের ব্র্যান্ড ভ্যালু বাড়াতে পারবে এই মার্কেটিং।
স্বল্প সময়ে পণ্যসমূহকে অধিক কাষ্টমারের সামনে রিচ করতে পারবেন।
ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের প্রকারভেদ :
বর্তমানে বাজারে ব্যবসা ক্ষেত্রে একক আধিপত্য বিস্তার করছে এই ডিজিটাল মার্কেটিং। তাই চলুন তাহলে জেনে আসি এর প্রকারভেদ সমূহ সম্পর্কে। ডিজিটাল মার্কেটিংকে মূলত ৬ টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। তা হল-
কন্টেন্ট মার্কেটিং
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং
এফিলিয়েট মার্কেটিং
ইমেইল মার্কেটিং
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন
ওয়েবসাইট মার্কেটিং।
কন্টেন্ট মার্কেটিং
একটি প্রতিষ্ঠানের পণ্যসমূহকে গ্রাহকদের সামনে বর্ণনা করে কন্টেন্ট, ব্লগ কিংবা ভিডিও আকারে উপস্থাপনা করার মাধ্যমকে বলা হয় কন্টেন্ট মার্কেটিং। আজকাল সকল প্রতিষ্ঠানে কন্টেন্ট মার্কেটিং বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এর মাধ্যমে একজন ক্রেতা পণ্য কেনার আগে পণ্যের গুণাগুণ, ব্যবহারবিধি, উপকারিতা, অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিতে পারবেন।
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং
বর্তমানে মানুষের দিনের বেশিরভাগ সময় অতিবাহিত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তাই ব্যবসার ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীগণ এখন টার্গেট করে থাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে। সামাজিক মাধ্যমে ব্যবসায়িক পণ্যের বিজ্ঞাপন প্রকার করে খুব সহজে গ্রাহকদের নিজের পণ্য সম্পর্কে জানান দিতে পারে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো।
এফিলিয়েট মার্কেটিং
ই-কমার্স সাইটের পণ্যমসূহ সম্পর্কে রিভিউ দিয়ে গ্রাহকদের সেই পণ্য কেনার প্রতি আগ্রহী করা তোলাই হল এফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের কাজ। বর্তমানে এফিলিয়েট মার্কেটিংকে কেন্দ্র করে ভালো বাণিজ্য গড়ে উঠেছে আমাদের দেশে।
ইমেইল মার্কেটিং
গ্রাহকদের ইমেইল সংগ্রহ করে নিজের পণ্য সমূহকে ইমেইলের মাধ্যমে প্রচার এবং প্রচারণা করাকে ইমেইল মার্কেটিং বলা হয়। ইমেইল মার্কেটিং এর মাধ্যমে আজকাল ক্রেতারাই বেশ সচেতন হয়ে উঠেছে পণ্য কেনা সম্পর্কে।
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন
আমরা যদি সার্চ ইঞ্জিনে কোন পণ্য সম্পর্কে সার্চ করি সবার আগে যেসব পণ্য চলে আসে তা হয়েছে এসইও এর ফলে। আপনার পণ্য সমূহ এসইও করলে সার্চ বারে সবার সামনে আসবে। গ্রাহকরা পণ্য সহজে কিনতে পারবে এবং আপনার পণ্য বিক্রির সংখ্যাও বাড়বে।
ওয়েবসাইট মার্কেটিং
আজকাল সকল প্ৰতিষ্ঠান তাদের পণ্যসমূহ ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিক্রয় করে থাকে। তেমনি আমরা যখন কোন ওয়েবসাইটে প্রবেশ করলে বিজ্ঞাপন দেখতে পাই। সেই ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন প্রচারের মাধ্যমকে বলা হয় ওয়েবসাইট মার্কেটিং।
আরো পড়ুন: অনলাইনে আয় করার সহজ উপায়
ডিজিটাল মার্কেটিং করে আয়
বর্তমান সময়ে সবচেয়ে আলোচিত একটি শব্দ হল ডিজিটাল মার্কেটিং। ব্যবসা-খাতে এক বিপ্লব সাধন করেছে এই ক্ষেত্রটি। ঘরে বসেই আপনি বিশ্বের যেকোনো স্থানে আপনার ব্যবসাকে ছড়িয়ে দিতে পারছেন। বর্তমানে তাই প্রতিটি বড় প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু ছোট প্রতিষ্ঠানসমূহে আজকাল Digital Marketing পদে জনবল খুঁজে থাকেন। কিন্তু অনেকেই এই সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকার ফলে বড় বড় প্রতিষ্ঠান সমূহ বিদেশ থেকে দক্ষ ব্যক্তি উক্ত পদের জন্য মনোনীত করতে হয়। আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে এই সম্পর্কে জানা লোকজনের বড়োই অভাব। কিন্তু আপনি চাইলে নিজের প্রতিষ্ঠানের জন্য কিংবা একজন দক্ষ মার্কেটের হিসেবে গড়ে তুলতে চাইলে শিখতে পারেন ডিজিটাল মার্কেটিং।
ডিজিটাল মার্কেটিং কিভাবে শিখব
আপনি যে কোন স্কিল অর্জন করতে চান না কেন তার জন্য আপনার শিক্ষার অমনভাবে প্রয়োজন। Digital Marketing সেই ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম নয়। আপনি শিখতে চাইলে ২ ধরণের উপায় রয়েছে। যথা:
অনলাইন
অফলাইন
অনলাইন
অনলাইনে আপনি ঘরে বসে ,নিজের পছন্দমতো সময়ে ই লার্নিং পদ্ধতির মাধ্যমে ঘরে বসে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে পারবেন।
অফলাইন
অফলাইন পদ্ধতি মূলত কোন প্ৰতিষ্ঠানের গিয়ে সেই প্ৰতিষ্ঠান এর অধীনে গিয়ে শিখতে হবে।
ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার উপায়
আপনি যদি ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে চান তাহলে আপনি অনলাইন কিংবা অফলাইন দুইভাবে শিখতে পারবেন। আপনারা কোথায় ডিজিটাল মার্কেটিং ভালোভাবে শিখতে পারবেন সেই সম্পর্কে আপনাদের ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করছি।
উপসংহার
চাহিদা-সম্পন্ন পেশায় অধিষ্ঠিত হতে কে না চায়? স্বপ্নের চাকরি এবং সেই সাথে পছন্দের পেশায় নিযুক্ত হতে চাইলে আজই বেছে নিতে পারেন।
Post a Comment